বর্তমান যুগের সমস্ত ক্ষেত্রগুলোর মৌলিক একটি বিষয়বস্তু হলো যেকোনো বিষয়ের সৌন্দর্য। আর ইসলাম সুরুচির ধর্ম। সুরুচিবোধের কারণেই তাকে সর্বশ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন করানো হয়েছে। আর সুন্দর বলতে অবস্থার আভিজাত্যকেই বুঝায়।

তাই উচিত হলো ব্যক্তি জীবনের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যকে পরিপাটি করার জন্য সাধ্যানুযায়ী উত্তম পোশাক পরিধান ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালোবাসেন’ (সূরা আল বাকারাহ-২২২)।

ইসলাম উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনকে সমর্থন করে না। কুরআন ও হাদিসে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ‘হে মুহাম্মদ! তাদেরকে বলে দিন, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য যে সব সৌন্দর্য সামগ্রী সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো কে হারাম করেছে? আর আল্লাহর দেয়া পবিত্র জিনিসগুলো কে নিষিদ্ধ করেছে? বলুন, দুনিয়ার জীবনেও এসব জিনিস ঈমানদারদের জন্য, আর কিয়ামতের দিনে এগুলো তো একান্তভাবে তাদেরই জন্য হবে’ (সূরা আরাফ-৩২)।

সুন্দর জিনিসটি মানুষ চড়া মূল্যে ক্রয় করে। আর আল্লাহ তায়ালাও খাঁটি আমলগুলোর জন্য তার বান্দাকে অধিক পরিমাণ মূল্য দেবেন। আমাদের জীবন-মৃত্যু সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই হলো আমলের মধ্যে কার চেয়ে কে উত্তম তা জানার জন্য। কার আমলের চেয়ে কার আমল কত সুন্দর এটি যাচাই করার জন্য। যেমন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘তিনি জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন এ কথা যাচাই করার জন্য যে, তোমাদের মধ্যে কে উত্তম আমল করে’ (সূরা মূলক-২)।

কাঠের ফার্নিচার বার্নিশ করে নকশা করার আগ পর্যন্ত তার কোনো সৌন্দর্য থাকে না। অনুরূপভাবে আমলের ক্ষেত্রে উদাহরণস্বরূপ নামাজের জন্য পবিত্র অবস্থায়, খুশুখুজু অবলম্বন ব্যতীত নামাজ আদায় করাটাও এক প্রকার অসৌন্দর্য। যেমন জ্ঞানের সৌন্দর্য সহনশীলতায়, নিয়ামতের সৌন্দর্য কৃতজ্ঞতায়। একজন ছাত্রের সৌন্দর্য শিক্ষকের সাথে তার নমনীয় আচরণ। নামাজের সৌন্দর্য একাগ্রতার মধ্যে। ভয়ের সৌন্দর্য গুনাহ পরিত্যাগ করার মাধ্যমে। সন্তানের সৌন্দর্য পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে। আর এ সব কিছুর মধ্যে সৌন্দর্য প্রকাশ পাবে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে।

কারো সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে নিজেকে পরিপাটি রেখে বের হতে হবে। কেননা, আল্লাহ নিজে সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন।

লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া, বসিলা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা